ঢাকা , সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫ , ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

​রান্না থেকে পড়াশোনা, সবই চলে মোমের আলোয়

ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ০৭-০৭-২০২৫ ০৫:০৩:২৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৭-০৭-২০২৫ ০৫:০৩:২৪ অপরাহ্ন
​রান্না থেকে পড়াশোনা, সবই চলে মোমের আলোয় প্রতীকী ছবি
স্বাধীনতা পা রেখেছে ৭৮ বছরে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জামুড়িয়া বিধানসভা এলাকার পরিহারপুরসহ বেশ কিছু জায়গায় এখনও অন্ধকার! রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বিদ্যুতের সরবরাহ শুরুই করতে পারেনি এ সমস্ত অঞ্চলে। ফলে আজও হ্যারিকেন বা মোমবাতির আলোয় চলে জীবন। রান্না থেকে পড়াশোনা, সবই চলে লণ্ঠনের আলোয়।

সবচেয়ে করুণ দশা জামুড়িয়া পুরসভার পরিহারপুর এলাকায়। আব্দুল কায়ুম, বা মমতাজ হোসেন অথবা রাজেশ বাউরিরা জানাচ্ছেন, গ্রাম ও সংলগ্ন বাগানপাড়া, ১০ নম্বর কলোনি, শিশু মহল্লা, তিনপুকুরিয়া, লাল ধাওড়া, গোয়ালপাড়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় বছরের পর বছর বিদ্যুৎ পর্ষদের কাছে আবেদন করেও মেলেনি সুফল।

রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ বাণিজ্যিক সংযোগের জন্য হাই-টেনশন কেবল এই এলাকার উপর দিয়ে নিয়ে গিয়েছে, তার পরেও এলাকায় বসবাসকারী প্রায় কুড়ি হাজার মানুষ এখনও বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত!

সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছে স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা। সম্প্রতি রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন দপ্তরের আসানসোলের অফিসে গণস্বাক্ষর করা দাবিপত্র জমা পড়েছে। তবে এতে কোনও সুরাহা হবে কি না, তার উত্তর কারও জানা নেই।

পরিহরপাড়ার এক ছাত্রী সুনীতা বাউরির প্রশ্ন, ‘কেন আমরা সারা বছর এভাবে হ্যারিকেন বা লন্ঠনের আলোয় পড়ব? গ্রামের উপর দিয়ে বিদ্যুতের তার গিয়েছে, অথচ আমরা থাকি আঁধারে!’

জামুরিয়ায় বিদ্যুৎ বণ্টন সংক্রান্ত দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘সমীক্ষায় কিছু সমস্যা ধরা পড়ায় ওই বিশাল এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়নি।’ পুর এলাকার মধ্যে থাকা এবিপিট, কইথি, মিঠাপুর অথবা পঞ্চায়েত সমিতি এলাকার মধ্যে থাকা পরাসিয়া, বেলবাদ, খাস কেন্দা অঞ্চলেও রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বিদ্যুতের কোনও ব্যবস্থা নেই।

ফলে কোনও কোনও অঞ্চলে বিশেষ করে খনি সংলগ্ন এলাকায় ইসিএলের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। কিন্তু যোগানের চেয়ে চাহিদার মাত্রা অনেক বেশি। তা ছাড়া ইসিএলের দেওয়া বিদ্যুতে ভোল্টেজ থাকে না-বললেই হয়। ফলে সমস্যা মেটেনি।

সবচেয়ে বড় কথা, কখনও ট্রান্সফরমার অচল হলে তিন সপ্তাহ বা মাসের পর মাস লেগে যায় তা ঠিক হতে। এতে দিনের পর দিন যন্ত্রণা সইতে হয় সাধারণ মানুষকে।

জামুড়িয়ার বাসিন্দা শ্যামল দাস বলছেন, ‘অনেকে এখানে এখন জেনারেটর ভাড়া করে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার সুবিধার জন্য। কিন্তু এ ভাবে তো প্রত্যেক দিন চলা সম্ভব নয়। ভোট এলেই নেতারা আসেন, প্রতিশ্রুতি দেন, তার পরে ভোট শেষ হলে সব হাওয়ায় ভেসে যায়। দশকের পর দশক বিদ্যুৎ আসে না।’

বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এনআইএন/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ